ইউনিয়ন পরিষদ ও আমাদের সমাজ ব্যাবস্থা

বর্তমান ব্যবস্থায় যেখানে উন্নয়নের কথা বলা হয়, সেখানে একটি মহল হাজার হাজার কোটি টাকার খেলা করে, উন্নয়নের কথা বলে বিশাল আকারের কিছু প্রজেক্ট তৈরী করে । যেমন, সুইচ গেইটের নামে বড় প্রকল্প তৈরী কি আমাদের আদৌ প্রয়োজন আছে ? যেখানে ব্রীজের প্রয়োজন নেই, সেখানে কোন টাকা অপচয়ের কি কোন মানে হয় ? পদ্মা সেতুর নামে যে টাকা খরচ হচ্ছে, সেখানে ভবিষ্যতে কোন সেতুর দরকার আছে বলে আমি মনে করি না । কারণ, পদ্মা নদীতে উজান থেকে যে পরিমাণ পলি ও বালি অসচ্ছে সেখানে সেতুর কোন প্রয়োজন নাই । কয়েক বছর পর নদী শুকিয়ে মরুভূমির মত হলে পারাপার তো অনেক সহজ হয়ে যাবে । যা করার প্রয়োজন তা সরকার ও জনগণ এখনো করার উদ্দ্যোগ নেয়নি – উজান থেকে আসা পলি ও বালি নিয়িণ্ত্রণ না করা পর্যন্ত আমরা পানি শূণ্য থাকব, আমরা পানি ধরে রাখতে পারব না । কারণ, পলি বালি শোষণ করে নেয় ।

আমি মনে করি উজানের নদী থেকে পানি না আসলে ক্ষতি নাই । কারণ, তারা ইচ্ছা করে তাদের নদীর পারের গাছ গাছালী কেটে রেখেছে, আর এ কারণে অনেক পলি ও বালি এসে আমাদের ভাটির দেশের নদ-নদীগুলো ভরে গিয়েছে এবং সাথে সাথে সাগরের মুখ ভরে যাচ্ছে । আমরা যদি নদ-নদীগুলো খনন না করি তবে অচিরেই আমাদের দেশ মরুভূমিতে পরিণত হবে । বিশ্ব ব্যংক থেকে ঋণ নিয়ে এই কাজ করলে আমরা ঋণ পরিশোধ করতে পারব না । যদি বিশ্ব ব্যংক ঋণ দেয় তবে সেখানে আর্থিক হরিলুট তো হবেই তাছারা বিশ্ব ব্যংক ঋণ দেবেও না । আমাদের দেশ ও সমাজের খুব অল্প সংখ্যক লোক রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনিতী পুরোপূরি পড়েছেন বলে আমার মনে হয় । সমাজকে নিয়ে যে কয়জন ভাবেন তারা অল্পতেই সন্তুষ্ট এবং অপরের উপর নির্ভরশীল ।

উজানের দেশ চায় আমরা মরুভূমিতে বাস করি, এতে তাদের বাজার বাড়বে, আর এটাই তাদের মূল উদ্দেশ্য । তারা অহেতুক দেশের জনগণকে ধোকাবাজিতে আচ্ছন্ন রাখায় ব্যস্ত । আমাদের দেশ ও দেশের কল্যাণের জণ্য কেউ আন্তরিক ভাবে চিন্তা-ভাবনা করচ্ছে না । যা হচ্ছে তা শুধু নিজেদের সন্তুষ্টির জন্য । বর্তমান রাষ্ট্র পরিচালনার নিয়ম-নীতি আগের দিনের রাজা বাদশাহদের মত । তাদের নিজেদের একটি সংগঠন, তা হলো সংসদীয় ব্যবস্থা । এই সংসদীয় প্রতিনিধিত্বশীল ব্যবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে হবে ।

আসলে আমাদের দেশের জন্য খুবই দরকার একটি সুশিক্ষিত জাতি । আমরা যদি রাষ্ট্রবিজ্ঞান, বিশ্ব অর্থনীতি, সমাজ বিজ্ঞান ইত্যাদি অধ্যয়ণ করি এবং দেশ বিদেশ থেকে জ্ঞান অর্জন করে আসি তবেই এসব চিন্তা করা সম্ভব । আমাদের দেশ ও সমাজে যত প্রকার অপরাধ সংগঠিত হয় তা অন্য রাষ্ট্র বা সমাজে এতটুকুও হয় না । আমাদের এর উত্তর বের করতে হবে যে কেন আমাদের এই অপরাধ প্রবনতা । যেসব সমাজ ব্যবস্থায় “কল্যাণ রাষ্ট্র” তৈরী করা হয়েছে, সেখানে এরকম আমাদের দেশের মত অপরাধ প্রবণতা নাই । কল্যাণ রাষ্ট্রের নীতিতে দেশ চলছে বিধায় একে অপরকে মর্যাদার দৃষ্টিতে দেখে, আর এই মর্যাদা পাবার জন্যই আমাদের কল্যাণ রাষ্ট্রের প্রয়োজন ।

এখনো ইউরোপের বিভিন্ন দেশে তাদের নাগরকদের বিনে পয়সায় উচ্চ শিক্ষা দেওয়া হয় । আর এ শিক্ষা নিয়েই তারা সাচ্ছন্দে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে থাকে । আমরাও যদি তাদের মত এরকম শিক্ষা অর্জনের পাশাপাশি রাষ্ট্রবিজ্ঞান, বিশ্ব অর্থনীতি, সমাজ বিজ্ঞান ইত্যাদি অধ্যয়ণ পাঠ ব্যবস্থায় সংযুক্ত করি তো তাতে কনো অসুবিধা হয় না । আর এ শিক্ষায় যখনই আমরা সুশিক্ষিত হব, তখনি ভালোভাবে রাজনীতি বুঝতে পারব । আমাদের দেশের ভিতর থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে শিক্ষা নিলে এ বিষয়ে তেমন উন্নয়ন সম্ভব না । আমি অহবান করব, আজ যারা উচ্চশিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী তারা ইউরোপে এসে উল্লেখিত বিষয়গুলোর উপর জ্ঞান অর্জন করে রাজনীতিতে আসুন । এতে করে আমরা সবাই বুঝতে পারব আমাদের সমাজ এবং এই সমাজে আমাদের কি করণীয় ।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা কিভাবে তৈরী হয়েছে তা ভেবে দেখা খুবই প্রয়োজন । অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মাধ্যমে উন্নত দেশগুলোতে কিভাবে কর্মসংস্থান হয়েছে এবং তাদের জীবন যাত্রা কিভাবে নির্ধারিত হয়েছে তা তাদের দেশের বই পুস্তকে বিষদভাবে বর্ননা করা আছে, যা অমরা পড়লে ভালোভাবে বুঝতে পারব । তাদের এই সমাজ ব্যবস্থাকে বুঝতে পারলেই আমরা আমাদের সমাজকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব । আর এ জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে ।

একমাত্র সঠিক শিক্ষার মাধ্যমে আমাদের দেশকে একটি কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করা সম্ভব । তবে সবকিছুর মূলে একটি কথা হলো রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অর্থনীতি, সমাজ বিজ্ঞান ইত্যাদি অধ্যয়ণ করলে একটি সন্তুষ্টি পাওয়া যাবে, যা কিনা কোটি টাকার সমান । তখন আর টাকার জন্য হায় হায় করতে হবে না । আর সবার মন থেকে “টাকা চাই, টাকা চাই” এই মনোভাব দূর করতে হবে ।

আমাদের দেশে আমাদের সমাজ উপযোগী সর্বনিন্ম সাপ্তাহিক বা মাসিক বেতন ধার্য্য করতে হবে, যাতে করে সাধারণ মানুষ যা পাবে তা দিয়ে অনায়াসে তারা জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে । কেননা, এই বেতনের মাঝেই মুদ্রাস্ফীতি, দ্রব্যমূল্য ও অনান্য সুযোগ সুবিধার মিল থাকবে ।

শিক্ষার মূল উদ্দেশই হলো সেই শিক্ষার মূল্য দেওয়া, আর সেই সাথে দেশ ও সমাজের মানুষকে অন্তর দিয়ে ভালোবাসা । এটা কেবল অন্তরজাতিক মানের শিক্ষা অর্যনের মাধ্যমেই সম্ভব । দেশ ও জাতিকে সকল অগ্রাসন, এমনকি অর্থনৈতিক অগ্রাসন থেকে মুক্ত রাখতে হবে । আর এটা ভালোভাবে বুঝার জন্যই আমাদের সঠিক শিক্ষা অর্জন করতে হবে ।

কাজেই দেশের বাইরে এসে আমাদের রাজনীতি বিষয়ে শিক্ষা অর্জন করতে হবে, যাতে অমরা রাজনীতিকে পেশা হিসাবে না নিয়ে এটাকে সমস্যা সমাধানের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করতে পারি । আর এই শিক্ষিত রাজনীতিবিদগণ যখন দেশ ও জাতির সামনে বক্তব্য রাখবেন তখন সেটা সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে । বার্মার “অং সান সু কি” – র কমনওয়েল্থ সভার একটি বক্তৃতা শুনার মতই ছিল, সেখানে তিনি বলেছিলেন – “অমি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ণ শেষ করেছি, আর আমি চাই আমার দেশে যুক্তরাজ্যের মত অলিখিত সংবিধান ব্যবস্থা চালু হোক” ।

ইউরোপের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা খরচে এখনো পড়ালেখা সম্ভব । এইসব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাদের যা শিখা উচিত তা হলো – তাদের উৎপাদন ব্যবস্থা, শ্রম ব্যবস্থা, অবাসন ব্যবস্থা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিক্ষা ব্যবস্থা, চিকিৎসা ব্যবস্থা, সেবা ও মজুরির ধরণ এবং কল্যাণ রাষ্ট্রের অওতায় কি কি পাওয়া যায়, আর এসব কি কি প্রকারে বন্টন করা হয়; ইত্যাদি ।

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বাস স্টপের পাশে পত্র-পত্রিকার স্ট্যান্ড দেখা যায়, কিন্তু সেখানে কোন বিক্রেতা দেখা যায় না । লোকজন যাতায়াতের সময় নিজে নিজে অর্থের বিনিময়ে পত্র-পত্রিকা বা ম্যাগাজিন কিনে নিয়ে যায় । বাসে বা ট্রনে যাতায়াতের সময়ও লোকজন নিজের উদ্দ্যোগে টিকিট কিনে উঠে । এর পরও, সেখানে খুব একটা পুলিশও সচরাচর শহরের এখানে সেখানে দেখা যায় না । মোট কথা হলো, তাদের এই পরিবর্তন একদিনে হয়নি, তাদেরকে শত শত বছর সঠিক রাজনীতি আর যুদ্ধ করতে হয়েছে ।

তবে আমরা চাইলেও আমাদের দেশে এই ব্যবস্থা চালু করতে পারি । কিন্তু এতে করে আমাদের সাথে কুসংস্কারমনা লোকদের বিরোধ লেগে যাবে, যারা সবসময় মিথ্যা অপবাদ আর কুসংস্কারের মাধ্যমে জাতিকে পশ্চাৎমূখী করে রেখেছে এবং তারা কোন দিনই চাইবে না আমরা আলোর মুখ দেখি । আর তাই আমাদের সঠিক শিক্ষার মাধ্যমে রাজনীতি বুঝতে হবে, যাতে করে অমরা সঠিকভাবে ক্ষমতার বিকেণ্দ্রীকরণ করতে পারি । আর এই সাথে আমাদের “৪ – স্তরের শাষণ ব্যবস্থা” ভালোভাবে বুঝতে হবে ।

বাংলাদেশের জনগণ পর্যাপ্ত পরিমাণে পারিশ্রমিক না পাবার কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে, যার কারণে তারা এখানে সেখানে যত্রতত্র ছোট-খাটো ব্যবসা-বানিজ্য ও দোকান-পাট খুলে বসে থাকে । এই সব ব্যবসায়ীদের নিয়ম তাণ্ত্রিক ব্যবসায়িক ব্যবস্থায় আনা, জনগণের পারিশ্রমিক পর্যাপ্ত পরিমাণে আনা এবং জনগণের জীবনে সঠিক নিরাপত্তা বিধানের ব্যপারে “গ্রাম বাংলা গণতান্ত্রিক দল” কাজ করে যাবে ।

ফলমূল, শাক-সবজি ইত্যাদিতে বিষাক্ত রাসায়নি দ্রব্য মিশানো বা আকাশ সীমানা অতিক্রম করে দ্রব্যাদি বিক্রি বন্ধ করা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আদৌ সম্ভব না । এইসব ব্যাবসায়ীদের নিয়ণ্ত্রণে আনার জন্যে প্রয়োজন ইউনিয়ন পরিষদকে যথেষ্ট পরিমাণে প্রশাষনিক ক্ষমতা দেওয়া – যেখানে ব্যাবসায়ীদের ব্যাবসায়ীক লাইসেন্স দেওয়া থেকে শুরু করে দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও মধ্যম আকারের ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান সমাজে গড়ে তোলা হবে ।

আমাদের দেশের প্রতিষ্ঠানগূলো যাতে আন্তর্জাতিক আইন মেনে ব্যাবসা করে সেই জন্য তাদের প্রস্তুত করতে হবে, যাতে করে তারা তাদের দ্রব্য পরিবেশক বা উৎপাদনকারীকে সঠিক মূল্য পরিশোধের পাশাপাশি তাদের কর্মচারীদের যথার্ত পারিশ্রমিক দিতে পারে । আর তাদেরকে সেই পর্যায়ে পৌছানোর ব্যপারে “গ্রাম বাংলা গণতান্ত্রিক দল” কাজ করবে ।

আমাদের বুঝতে হবে, আমাদের কি এই যত্রতত্র ছোট-খাটো দোকান-পাটের প্রয়োজন আছে ? গ্রাম অঞ্চলে এদের প্রয়োজন থাকলেও শহরে এদের দরকার নেই । আর তাই এই সব লোকেদের সঠিক কর্মসংস্থান দেওয়া ও মানসম্মত মজুরির ব্যবস্থা করার ব্যপারে “গ্রাম বাংলা গণতান্ত্রিক দল” পর্যায়ক্রমে কাজ করে যাবে ।

ইউনিয়ন পরিষদ এই সকল ছোট – খাটো কাজ তদারকি ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে । তাদের অনুমতি ছাড়া কেউ ব্যক্তিগত উদ্দ্যোগে কোন ব্যাবসা করতে পারবে না । আর এ জন্য স্থানীয় নাগরিকদের ইউনিয়ন পরিষদের পরিকল্পনা বিভাগের অনুমতির জন্য আবেদন করতে হবে । এটাই হলো ইউনিয়ন পরিষদের প্রাথমিক স্তর । ইউনিয়ন পরিষদ সকল প্রকার শক্তি প্রয়োগ করে যে কোন কাজকে নিয়ন্ত্রণ করার সম্পূর্ণ অধিকার রাখে । এই অধিকার ইউনিয়ন পরিষদের উপর ন্যাস্ত করাই হলো গ্রাম বাংলা গণতান্ত্রিক দলের অন্যতম উদ্দেশ্য । এই দলের মূল ভাবনাই হলো সমাজের প্রতিটি নাগরিকের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ড ও চিন্তা-ভাবনা যাতে স্বাধীন ভাবে বিকশিত হয় সেই দিকটা উন্মোক্ত রাখা ।

আর এ জন্যই সকল নাগরিকের প্রত্যক্ষ অংসগ্রহণ খুবই প্রয়োজন । উন্নতমানের জীবন-যাপনের জন্যে সমাজের সকলকে সঠিক নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে । আর তা শুধু সঠিক শিক্ষাগ্রহণের মাধ্যমেই সম্ভব । বর্তমানে যে প্রকারের ইউনিয়ন পরিষদ দেখা যাচ্ছে তা সাজিয়ে উন্নতমানের করাই হলো এই দলের মূল উদ্দেশ্য ।

এই ইউনিয়ন পরিষদ সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ড এবং জীবন – যাপনের জন্যে যে হারে বেতন হওয়া দরকার তা ধার্য্য করবে এবং সাথে সাথে মুদ্রাস্ফীতিও নিয়ন্ত্রণ করবে । আর এটাই হবে অধুনিক গণতান্ত্রিক ব্যাবস্থাপনার মাধ্যমে নতুন ইউনিয়ন পরিষদ ।

আমাদের দেশ শত শত বছর ধরে অগণতাণ্ত্রিক ভাবে শাশ্বিত হয়ে অসচ্ছে । চল্লিশ বছর পূর্বে আমাদের দেশের নদ-নদী, হাওর-বিল যে রকম ছিল আজ আর সে রকম নাই । উজানের দেশ থেকে পলি ও বালি এসে সারা দেশটাকে ভরে দিয়েছে, যার ফল সরূপ আমরা কিছুকাল পর পানির জন্যে আহাকার করব । আমরা গভির নলকূপ দিয়েও পর্যাপ্ত পানি পাব না । আমরা বিদেশী সাহায্যের উপর আরো নির্ভরশীল হয়ে পরব । জনগণ আরো সম্বলহীন হয়ে পড়বে, যার ফলস্রুতিতে আমরা দূর্বল জাতিতে পরিণত হব । এ থেকে পরিত্রাণের জন্য তখন যুদ্ধ করা ছাড়া আর কোন গতি থাকবে না ।

আর এ জন্যই আমি “প্রত্যক্ষ গণতান্ত্রিক ব্যাবস্থা” নিয়ে গবেষণা করছি, যেটা কিনা আমাদের দেশে বহুকাল ধরে পঞ্চায়েত প্রথার মাধ্যমে গ্রামে গন্জে প্রচলিত আছে । এই ব্যবস্থায় কিছুটা ক্ষমতার লড়াই থাকলেও গ্রাম-বাংলার মানুষ এই প্রথায় অভ্যস্ত । আর তাই এই পঞ্চায়েত প্রথায় প্রত্যক্ষ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু করা প্রয়োজন । বর্তমানে পরোক্ষ প্রতিনিধিত্বশীল ব্যবস্থায় যে পরিমাণ অর্থ ব্যায় হয় তা কেবল নিজেদের ধণী করার কাজেই চলে যায়, যা কিনা “প্রত্যক্ষ গণতান্ত্রিক ব্যাবস্থায়” অসম্ভব।

পরোক্ষ প্রতিনিধিত্বশীল ব্যবস্থায় সরকার জনগণের মতামত ছাড়াই কাজ করে, যা কিনা অমি অসংযুক্ত মনে করি । উদাহরণ সরূপ কালিয়াকৈর উপজেলার উপর ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কথাই বলা যায়, এখানে যে বাইপাস নির্মাণ হচ্ছে তা সে অঞ্চলের আদৌ প্রয়োজন আছে কিনা তা ঐ ইউনিয়নের প্রতিটি নাগরিকের মতামত নেবার প্রয়োজন ছিল ।

প্রথমআলো পত্রিকা । ১২ এপ্রিল, ২০১৪

kaযেখানে মিনিটে ১টি যানবাহন চলাচল করে সেখানে না হয় এ রকম সড়ক নির্মাণ করা যায় । আর এটাও ভেবে দেখার প্রয়োজন যে পরিমাণ অর্থ ও ভূমি ব্যায় হবে তা ঐ অঞ্চলের কতটুকু উপকারে আসবে । কেননা এই অর্থ ও ভূমি তো জনগনেরই ।

আর তাই জনগণের সকল উন্নয়নমূলক কাজের জন্যে “গ্রাম বাংলা গণতান্ত্রিক দল” জেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিটি নাগরিকের মতামত নিয়ে পর্যায়ক্রমে কাজ করে যাবে ।

Scroll to Top